১৪ ফেব্রুয়ারি কোথা থেকে এলো এই প্রশ্নের জবাবে অনেকে বলেন প্রাচীন রোমান উৎসব লোপারকেলিয়াকে কেন্দ্র করে ভালোবাসা দিবস এসেছে।
রোমানরা মেয়ে ও বিবাহের দেবতা হিসেবে যোনোর সম্মানে এই উৎসব পালন করতো। এদিন মেয়েরা চিরকুটে ভালোবাসার নোট লিখে কলসের মতো একটি জারে রেখে দিতো যা বিলেটস নামে পরিচিত। এরপর ছেলেরা চিরকুটটি জার থেকে তুলতো। সেই চিরকুটে যে মেয়ের নাম লেখা থাকতো সেই মেয়ের সন্ধানে বের হতো ছেলেরা। একই সঙ্গে সেই মেয়ের নাম ছেলেটি তার শার্টে লিখে রাখতো ও লোকজনকে তার ভালোবাসার মানুষ সম্পর্কে জানিয়ে দিতো।
ভালোবাসা দিবস সম্পর্কে আরেকটি জনশ্রুতি হলো রোম সম্রাট দ্বিতীয় ক্লাডিয়াস যুদ্ধের জন্য সব ধরনের বিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। সম্রাটের ঘোষণার প্রতিবাদে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামে এক চিকিৎসক ১৪ ফেব্রুয়ারি এক জুটির বিয়ে সম্পন্ন করেন। এই কারণেই এদিন ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালিত হয়।
তবে ভালোবাসা দিবসের মূল ইতিহাস হলো চিকিৎসক ও পাদ্রী সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে কেন্দ্র করে। ইতালির রোম শহরে একজন চিকিৎসক ছিলেন যার নাম ছিলো সেন্ট ভ্যালেন্টাইন। তিনি চিকিৎসাপেশার পাশাপাশি ছিলেন পাদ্রী।
২৬৯ খ্রিস্টাব্দে তখনকার রোম সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস খ্রিস্ট ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। কিন্তু সেন্ট ভ্যালেন্টাইন সম্রাটের নির্দেশ অমান্য করে ধর্মপ্রচার করেন। ফলে তাঁকে এই অভিযোগে বন্দী রাখা হয়। কারাগারে বন্দী অবস্থায় জনৈক কারারক্ষীর দৃষ্টিহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এর মধ্য দিয়ে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়।
কারাবন্দী ভ্যালেন্টাইনের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে রোম সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেন। যেদিন তাঁর মৃত্যুদণ্ড হয়েছিলো সেদিনে ছিলো ১৪ ফেব্রুয়ারি। পরবর্তীতে ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে পোপ সেন্ট জেলাসিও ভ্যালেন্টাইনকে স্মরণ করে ১৪ ফেব্রুয়ারি সেন্ট ভ্যালেন্টাইনস দিবস ঘোষণা করেন।
একইভাবে ২৩ এপ্রিল সেন্ট জজ দিবস, ১১ নভেম্বর সেন্ট মার্টিন দিবস, ২৪ আগস্ট সেন্ট বার্থোলোমিজম দিবস, ১ নভেম্বর আল সেইন্টম দিবস, ৩০ নভেম্বর সেন্ট অ্যান্ড্রু দিবস ও ১৭ মার্চ সেন্ট প্যাট্রিক দিবস হিসেবে পালিত হয়।